২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন অধ্যায় রচিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর আওয়ামী লীগ কার্যত একটি বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক ফ্রন্টে পরিণত হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা কেউ কারাগারে, কেউ দেশের বাইরে, আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রাখছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই প্রতিবেদনকে ‘‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’’ বলে অভিহিত করেছে এবং দাবি করেছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত প্রোপাগান্ডার অংশ।
আওয়ামী লীগের এক-তৃতীয়াংশ নেতা বর্তমানে কারাগারে বন্দী। বাকি নেতাদের কেউ দেশের বাইরে লুকিয়ে রয়েছেন, আর কেউ আত্মগোপনে আছেন। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তাদের সম্পত্তি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
দলের এক নেতা প্রতিবেদনে বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ৩৭টি হত্যা মামলা এবং আনুমানিক ১০০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতিদিন আমার ঠিকানায় আইনি নোটিশের বাণ্ডিল পাঠানো হচ্ছে।’’ অন্য এক নেতা জানান, ‘‘আমার বাড়ি, বাবার বাড়ি এবং ভাইদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
দলের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা এখনো মনোবল ধরে রেখেছেন। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ও সংসদ সদস্য বলেছেন, ‘‘আমরা দেশ পুনর্গঠনের সংকল্প নিয়েছি।’’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ হক বলেন, ‘‘দলটির হাজার হাজার কর্মী উচ্ছেদের শিকার। তারা খাদ্য কিনতে পারছে না। তবে তৃণমূল কর্মীদের মনোবল অনেক উঁচুতে। আমরা ভারতের সহায়তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রত্যাশা করছি।’’
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘আমাদের সবার ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া উচিত।’’ তিনি আরও জানান, নেতাকর্মীরা দেশে ফিরে জনগণের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই প্রতিবেদনের সত্যতা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে চালানো একটি প্রচারণা।