দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত অবস্থানে প্রভাব ফেলা একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যৌথভাবে নির্মিত জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি ভেস্তে দিতে হুমকি দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগের অফিসিয়াল এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে এই বার্তাটি শেয়ার করা হয়।

জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমান পাকিস্তান ও চীনের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি আধুনিক যুদ্ধবিমান। এর উন্নত প্রযুক্তি ও কার্যক্ষমতা আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নাইজেরিয়া ও মিয়ানমার ইতোমধ্যেই এই বিমান ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশ যদি এই বিমান কিনে, তা দেশের বিমান বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। তবে ভারতের আপত্তি এই চুক্তি বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
জেএফ-১৭ ব্লক-৩: বৈশিষ্ট্য ও সক্ষমতা
ইঞ্জিন: রাশিয়ার ক্লিমভ আরডি-৯৩এমএ টার্বোফ্যান ইঞ্জিন।
গতি: প্রতি ঘণ্টায় ১,৯১০ কিমি।
পরিসীমা: অভ্যন্তরীণ জ্বালানিতে ৯০০ কিমি।
রাডার: KLJ-7A অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (AESA)।
অস্ত্র ব্যবস্থা: PL-15 এবং PL-10 মিসাইল বহনে সক্ষম।
ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা: উন্নত প্রযুক্তির সুরক্ষা।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। বিশেষত ২০০৯ সাল থেকে দিল্লি এ বিষয়ে আরও সতর্ক। জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমান ভারতের সামরিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বলে মনে করছে দেশটি।
বিশ্লেষকদের মতে, চুক্তিটি সফল হলে দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে পরিবর্তন আসবে এবং বাংলাদেশ চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গভীর করবে।
পাকিস্তান ও চীনের প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব দীর্ঘমেয়াদি। পাকিস্তান তাদের সামরিক শক্তি উন্নয়নে চীনের প্রযুক্তি ও সমর্থন ব্যবহার করছে।
নৌবাহিনী: পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে টাইপ ০৪১ সাবমেরিনসহ উন্নত জাহাজ পেয়েছে।
মিসাইল প্রযুক্তি: শাহীনের মতো উন্নত মিসাইল ব্যবস্থা চীনের সহায়তায় তৈরি।
যৌথ মহড়া: দুই দেশের সামরিক বাহিনীর নিয়মিত সহযোগিতা।
বাংলাদেশ-জেএফ-১৭ চুক্তি নিয়ে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা স্পষ্ট। চুক্তিটি শুধু প্রতিরক্ষা বিষয় নয়, এটি আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য ও কূটনৈতিক অবস্থানের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।