ঢাকা, জানুয়ারি ২৩:
ভোজ্যতেলের বাজার যেন নিয়মিত বাণিজ্যিক যুক্তির বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশ্ববাজারে দাম ওঠানামা এবং সরকারের শুল্ক হ্রাসের পরও দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে, পাশাপাশি সরবরাহে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। এ অবস্থায় ভোক্তাদের পাশাপাশি খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন।
গত অক্টোবর-নভেম্বরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১,১৪৫ ডলার হয়েছিল। পরে ডিসেম্বরে তা কমে ১,০৬৪ ডলারে নেমে এলেও দেশীয় বাজারে তেলের দাম কমেনি। বরং, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বেড়েছে। সরকার দুই দফা শুল্ক কমালেও বাজারে সেই সুবিধার প্রতিফলন দেখা যায়নি।
রাজধানীর টাউনহল বাজার থেকে শুরু করে মৌলভীবাজারের পাইকারি মার্কেট পর্যন্ত তেলের সরবরাহ কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, মিল মালিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ সীমিত করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এমনকি খুচরা ব্যবসায়ীরা তেলের সাথে পোলাওয়ের চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন,
“আমাদেরকে তেলের সাথে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। ক্রেতারা তা নিতে চান না। ফলে আমরাও বিক্রি করতে পারছি না।”
অন্যদিকে মৌলভীবাজারে সয়াবিন তেলের ডেলিভারি অর্ডার পেতে ব্যবসায়ীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মিল মালিকরা সঠিকভাবে সরবরাহ দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।
মিল মালিকদের সংগঠন নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ট্যারিফ কমিশনে পাঠিয়েছে। তারা বলছেন, ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে বর্তমান দামেও তাদের পোষাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন,
“ডলারের বর্তমান রেট অনুযায়ী আমাদের আরও দাম বাড়াতে হবে। ট্যারিফ কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”
সরকারের শুল্ক হ্রাসে দাম কমার কথা থাকলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। উল্টো নতুন করে দাম বৃদ্ধির আশঙ্কায় ভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো: বশির উদ্দিন জানান,
“শুল্ক কমিয়ে কেজিপ্রতি ১০-১২ টাকা কমার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আবার যদি দাম বাড়ে, তাহলে ভোক্তাদের ওপরই চাপ বাড়বে।”
উৎপাদক কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না এলেও তারা জানিয়েছেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।