বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে চার দিনের সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ডে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার এই সফর বৈশ্বিক অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে জোরালো করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে যাত্রা করেন অধ্যাপক ইউনূস। প্রেস সচিব শফিউল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীরা সময়মতো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এই সফরে অধ্যাপক ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও বৈঠকে অংশ নেবেন। তার বৈঠকের তালিকায় রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ এবং থাই প্রধানমন্ত্রী পায়েংটার্ন শিনাওয়াত্রা। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কন্যা শেখা লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড এবং মেটা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগের সঙ্গেও তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
অধ্যাপক ইউনূসের এই সফরে আরও আলোচনা হবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল ড. অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালার সঙ্গে। এই বৈঠকগুলোতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে এই বছর একটি পৃথক সংলাপ আয়োজন করা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে আলোচনা হবে। এই সংলাপে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং উন্নয়ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।
অধ্যাপক ইউনূসের এই সফর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং বৈশ্বিক ব্যবসা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করবে। তার উপস্থিতি বাংলাদেশের উন্নয়নকে বিশ্বমঞ্চে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী ২৫ জানুয়ারি অধ্যাপক ইউনূসের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তার এই সফরের সফল সমাপ্তি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সফরের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত হবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও প্রযুক্তি খাতে দেশের অগ্রগতি আরও সুদৃঢ় হবে।