গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (২০ জানুয়ারি) ভোর রাতে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিরা গাজায় ফিরে আসেন। দীর্ঘ বন্দিদশা শেষে আপনজনদের কাছে ফিরে আসায় চোখে আনন্দাশ্রু নিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হন তারা।
মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন রোজ খাওয়াইস, যিনি দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ফিরে গিয়েছেন। তিনি বন্দিদশার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, ইসরায়েলি কারাগারের কঠিন পরিস্থিতির কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। খাওয়াইস বলেন, “আমরা ছোট ছোট বর্গাকার জানালার মাধ্যমে আকাশ দেখতে পেতাম। আমি প্রতিনিয়ত আশা করতাম একদিন এই বর্গাকার ছাড়াই আকাশ দেখতে পাব।”
তিনি আরও জানান, “কারাগারে কোনো চিকিৎসা সেবা ছিল না। আমার স্ট্রোকের উপসর্গ ছিল, হৃদপিণ্ডের চারপাশে তরল জমা হয়েছিল এবং রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলাম। অসুস্থতাকে ভয় পাইনি, কিন্তু উদ্বিগ্ন ছিলাম যে আমার পরিবার জানবে আমি অসুস্থ।”
আরেক মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক বুশরা আল-তাউইল তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি জানান, বন্দিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তির খবর পৌঁছানোর পর মুক্তির অপেক্ষার দিনগুলো ছিল অত্যন্ত কঠিন। “আমরা জানতাম যে যেকোনো মুহূর্তে মুক্তি পাব। আলহামদুলিল্লাহ, শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়েছে,” বলেন তিনি।
বুশরা আল-তাউইল জানান, তার পিতা এখনো ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে তাকে পরবর্তীতে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
এদিকে, মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। অনেকেই সেখানে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
যুদ্ধবিরতির ফলস্বরূপ মুক্তি পাওয়া বন্দিরা এখন পরিবারের কাছে ফিরে এসে নতুনভাবে জীবন শুরু করার প্রত্যাশা করছেন। তবে তাদের অভিজ্ঞতা ইসরায়েলের কারাগার ব্যবস্থার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি