সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর সাড়ে ১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এক-এগারোর সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তির খবর শুনে সকাল থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে জড়ো হতে থাকেন। লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির বিষয়টি বিএনপির নেতাকর্মীসহ সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে।
কারাগারে থাকা অবস্থায় লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলে। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর এসব মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। হাইকোর্ট একে একে তাকে বিভিন্ন মামলায় খালাস দেন।
গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পান। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে, ১৮ ডিসেম্বর একই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি, যাদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবরও ছিলেন, খালাস পান।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের চালান আটক হয়। কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ অস্ত্র চোরাচালান মামলায় ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং অস্ত্র আইনের মামলায় একই আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এই মামলার রায় হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে এবং আসামিরা আপিল দায়ের করেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর হাইকোর্ট থেকে আসামিদের মুক্তি মেলে।
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে একই আসনে জয়লাভ করেন। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।