ঢাকা:
সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পটভূমিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঢাকা এবং ইসলামাবাদ নিজেদের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে অগ্রসর হচ্ছে।
সম্প্রতি জানা গেছে, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট গঠনে আগ্রহী। এ বিষয়ে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সামরিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ১৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি শহরের সেনা সদর দপ্তরে দুই দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মনির এবং বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করেন।
আইএসপিআরের বিবৃতি অনুযায়ী, উভয় পক্ষ একমত হয়েছেন যে, বহিঃশক্তির প্রভাব থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হওয়া উচিত। বৈঠকে প্রতিরক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং যৌথ উদ্যোগ বাড়ানোর ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেন, “দুই দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক ছিল বৈরি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে উভয় দেশ উদ্যোগ নিচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তান থেকে আসা কার্গোর সরাসরি পরিদর্শনের বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে।
এছাড়া, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানা গেছে। করাচি বন্দরে আগামী বছর যৌথ নৌমহড়া “অমান-২০২৫”-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এই সহযোগিতার মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত:
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে। ভারতের উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ এই সম্পর্কের জোরদারতা উপমহাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত মনে করছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এই ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তির মেরুকরণ তৈরি করতে পারে।