ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত হয়েও তালিকায় নাম নেই স্কুল ছাত্র আরফানের
গত বছরের ৩ আগস্ট কুমিল্লার ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলি ও হামলায় আহত ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. আরফান হোসেন মজুমদার এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দীর্ঘ ছয় মাস পার হলেও তিনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য পাননি। এমনকি সরকারি আহতদের তালিকায় তার নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে মিছিলে যোগ দেন আরফান। মিছিল চলাকালে পুলিশ ও যুবলীগের লোকজন ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়। এতে আরফানের মাথা ও পিঠে প্রায় ২০০-২৫০ ছররা গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত আরফান হোসেন মজুমদার জানান, “আমি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করছি, তারা যেন আমার খোঁজখবর নেন এবং আমাকে আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।”
তার বাবা মো. জুয়েল রানা মজুমদার বলেন, “আমার ছেলে আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য আমরা পাইনি। আমি নিজের সাধ্যমতো চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এখনো তার মাথায় কিছু গুলি রয়ে গেছে। আমি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করছি, যেন আহতদের তালিকায় আমার ছেলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।”
কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক সংস্থার পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে যে, দ্রুত আরফানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক এবং আহতদের তালিকায় তার নাম লিপিবদ্ধ করা হোক।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, “আবেদন করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের সময় আরফানের মতো অনেকেই আহত হয়েছেন। তবে আরফানের ক্ষেত্রে তার পরিবারের দাবিগুলো এখনো পূরণ হয়নি। বৈষম্য বিরোধী এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। আরফান সেই আন্দোলনের একজন সাহসী অংশগ্রাহী, যার জীবন বর্তমানে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
চিকিৎসকদের মতে, আরফানের সুস্থতার জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। একইসঙ্গে, তার পরিবারের আর্থিক অবস্থাও খুবই সংকটময়। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ ঘটনা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের প্রতি প্রশাসনের দায়িত্বের দিকে নজর দেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের আরও মানবিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।