অব্যবহৃত মোবাইল ডেটা বহাল রাখার দাবিতে নোটিশ
মোবাইল ব্যবহারকারীদের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডেটা, মিনিট এবং এসএমএস মেয়াদ শেষে পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করার দাবিতে সরকার এবং মোবাইল অপারেটরদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাংলালিংক লিমিটেড এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড বরাবর এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
গত সোমবার দেওয়া এই নোটিশে আইনজীবী মিজানুর রহমান জানান, নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে। নোটিশে বলা হয়েছে, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বর্তমানে প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত ডেটা, মিনিট ও এসএমএস আর ব্যবহার করতে পারেন না। এটি গ্রাহকদের অর্থনৈতিক ও নৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে।
বর্তমানে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক এবং টেলিটকের মোবাইল প্যাকেজের সময়সীমা শেষ হলে গ্রাহকরা অব্যবহৃত ডেটা বা মিনিট ব্যবহার করতে পারেন না। গ্রাহককে পুনরায় ডেটা প্যাকেজ কিনতে বাধ্য করা হয়, যা ভোক্তাদের জন্য বাড়তি খরচ তৈরি করে। এই সমস্যা নিরসনে আইনজীবী মিজানুর রহমান একটি সমাধান প্রস্তাব করেছেন।
গ্রাহকদের সমস্যাগুলো:
- অব্যবহৃত ডেটার মেয়াদ শেষ হওয়া: সময়সীমা শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত ডেটা ব্যবহার করতে না পারা।
- অতিরিক্ত খরচের চাপ: নতুন প্যাকেজ কিনতে বাধ্য হওয়া।
- অর্থনৈতিক ক্ষতি: গ্রাহকের প্যাকেজের সম্পূর্ণ সুবিধা না পাওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতি।
নোটিশে আইনজীবী উল্লেখ করেছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় গ্রাহকদের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। এর পরিবর্তে প্যাকেজের সময়সীমা শেষ হলেও অব্যবহৃত ডেটা, মিনিট এবং এসএমএসকে পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। এই উদ্যোগ গ্রাহকদের অর্থনৈতিক স্বস্তি এনে দেবে এবং অপারেটরদের গ্রাহকসেবা উন্নত করতে উৎসাহিত করবে।
বাংলাদেশের বিদ্যমান ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা আইনে গ্রাহকদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে, মোবাইল অপারেটরদের বর্তমান নীতি এই আইন অমান্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আইনজীবী মিজানুর রহমান জানান, “এই নোটিশ শুধুমাত্র গ্রাহকদের অধিকার সংরক্ষণের জন্যই নয়, বরং টেলিকম সেক্টরে একটি ন্যায্য পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য।”
অনেক দেশে মোবাইল অপারেটররা অব্যবহৃত ডেটা বহাল রাখার সুবিধা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশে গ্রাহকরা তাদের অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী মাসে ব্যবহার করতে পারেন। এটি গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং কোম্পানির প্রতি আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
মোবাইল অপারেটরদের অবস্থান
এখনও পর্যন্ত মোবাইল অপারেটররা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত আইনি নোটিশের পর তাদের প্রতিক্রিয়া এবং পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে। এই রিট আবেদনের মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরদের বাধ্য করা হতে পারে অব্যবহৃত ডেটা এবং মিনিট বহাল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
নতুন এই ব্যবস্থাপনা কার্যকর হলে গ্রাহকরা নিম্নলিখিত সুবিধা পাবেন:
- অতিরিক্ত খরচের চাপ কমবে: নতুন প্যাকেজ কেনার প্রয়োজন হবে না।
- সুবিধার পূর্ণ ব্যবহার: প্যাকেজের সম্পূর্ণ সুবিধা পাওয়া যাবে।
- গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি: মোবাইল অপারেটরদের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বাড়বে।
মোবাইল ইন্টারনেট ডেটা এবং মিনিট বহাল রাখার উদ্যোগ গ্রাহকদের আর্থিক স্বস্তি নিশ্চিত করবে এবং একটি ন্যায্য সেবা পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আইনজীবীর পাঠানো নোটিশটি এই বিষয়টিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার এবং মোবাইল অপারেটররা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।