আর্থিক তদারকিতে শেখ হাসিনা পরিবারের নতুন অধ্যায়
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ (বিএফআইইউ)। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিএফআইইউ-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন (পুতুল), ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি), এবং দুই মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা কোনো আর্থিক অপরাধে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা। বিএফআইইউ জানায়, এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা অনুযায়ী একটি রুটিন তদারকি। তবে এই পদক্ষেপটি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’ এবং ‘সানডে টাইমস’ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন। এই ফ্ল্যাটটি উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় অবস্থিত এবং এটি একটি আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ফ্ল্যাটটি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক মিত্রের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লিখেছেন। এতে তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ পাচার এবং অন্যান্য আর্থিক অপরাধ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
১. আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের লেনদেন স্বচ্ছ রাখতে এই পদক্ষেপ সহায়ক। ২. মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ: দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে এই উদ্যোগ অপরিহার্য।
এই তদন্ত প্রক্রিয়ার ফলাফল কী হতে পারে এবং এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ ইতিবাচক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলবের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থিক তদারকিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করার জন্য এ ধরনের কার্যক্রম দেশের আর্থিক খাতকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।