সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছাত্রদলের এক কর্মীর ছুরিকাঘাতের চেষ্টা এবং শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে। পরে অভিযুক্ত শেখ ফাকাব্বির সিন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
শেখ ফাকাব্বির সিন, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী, সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর রুমে যান। সেখানে নিজের বিভাগের ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফাকাব্বির কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চাকু বের করে আমিরুল নামে এক সহপাঠীকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। আমিরুল রুম থেকে বেরিয়ে নিরাপত্তার জন্য প্রক্টর অফিসে খবর দেন এবং অভিযুক্তকে রুমে আটকে রাখেন।
রুমে আটকে থাকার সময় ফাকাব্বির নিজের শরীরে আঁচড় দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, শিবিরের কর্মীরা তাকে আটক করে হামলা করেছে।
পরবর্তী সময়ে প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে একটি চাকুসহ উদ্ধার করেন এবং প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান।
জিজ্ঞাসাবাদের পর ফাকাব্বির ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে শিবিরকে খারাপভাবে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ করার কথা স্বীকার করেন। তিনি লেখেন, “আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমনটা করেছি। আমার জন্য সবার যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, আমি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার মিথ্যা অভিযোগ তুলে নিয়েছে। এ বিষয়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
শাহপরাণ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইফতেখার আহমেদ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারত। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পক্ষে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।