জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়
আগামী জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রূপা হকের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই সম্ভাব্য সময়সীমা উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও অবাধ হওয়ার নিশ্চয়তাও দেন।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রূপা হক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের সময়সীমা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ, এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জানান, নির্বাচনের নির্ধারিত সময় মানুষ কতটা সংস্কার চায় তার উপর নির্ভর করছে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, “গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সেখানে ছিল একটি ভুয়া সংসদ, ভুয়া এমপি এবং ভুয়া স্পিকার। জোরপূর্বক দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। মানুষ এখন তাদের কণ্ঠ ফিরে পেয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টা রূপা হককে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে জনগণের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষের মধ্যে ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা ফিরে আসার যে আশা তৈরি হয়েছে, তা নির্বাচনের সময় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রূপা হক বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাজ্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী’র বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুর্শেদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়।
ইউকেবিসিসিআই’র (UKBCCI) তিন দিনের সফরকালে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউকেবিসিসিআই’র চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ এবং প্রেসিডেন্ট এম জি মওলা মিয়া।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের, বিশেষত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।
বৈঠকে রূপা হক ভবিষ্যৎ নির্বাচনের পর্যবেক্ষক হিসেবে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখতে পারা অত্যন্ত সম্মানের বিষয়।”
আগামী নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা বাড়ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে, যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।