কলকাতা, ১১ ডিসেম্বর
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজ্যের রাজনীতিতে। পররাষ্ট্রনীতি রাজ্যের বিষয় নয় বলে একমত হলেও, সংখ্যালঘু ইস্যু ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিযোগ ঘিরে দুজনের বক্তব্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট।
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দির পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন মমতা। তিনি জানান, “এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। কিছু গণমাধ্যম ভুয়া তথ্য ও ভিডিও প্রচার করছে। এতে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি হতে পারে।”
মমতা আরও বলেন, “বাংলাদেশে ভিসা শিথিল হয়েছে, যাতে ওপারের মানুষ এখানে আসতে পারেন। তবে যারা ফিরতে চান, তাদের জন্যও ব্যবস্থা করা উচিত। প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হলে তার নিন্দা জানাই। তবে সীমান্তে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে না।”
মমতার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। একদিকে তিনি কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ এড়িয়ে চলছেন, অন্যদিকে নিজের স্বার্থে ধর্মীয় ইস্যুতে রাজনীতি করছেন।”
শুভেন্দু আরও দাবি করেন, “দীঘায় সরকারি অর্থায়নে মন্দির তৈরি করে মমতা হিন্দু শাস্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। এটি তৃণমূলের ভোট রাজনীতির কৌশল। তবে এই ধরণের প্রচারণা রাজ্যের হিন্দুদের কাছে ইতিবাচক সাড়া পাবে না। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে।”
রাজ্যে সংখ্যালঘু রাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে মমতা ও শুভেন্দুর এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে এটি সংখ্যালঘু ও হিন্দু ভোটব্যাংক রক্ষার কৌশল হলেও, বিরোধীরা একে ‘দ্বিচারিতা’ বলে অভিহিত করছে।