নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত এসব অপরাধের বিচার দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এই নোটিশ পাঠান। নোটিশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের নির্দেশে পুলিশ, র্যাব, এবং বিজিবি কর্তৃক সংঘটিত এই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। অনেক মৃতদেহ গুম করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সারা বিশ্বে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, আগ্রাসন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য গঠিত হয়েছে, এবং বাংলাদেশ ২০১০ সালের ২৩ মার্চ এই আদালতের এখতিয়ার অনুমোদন করেছে। এর ফলে বাংলাদেশে সংঘটিত এমন অপরাধের বিচার এই আদালত করতে পারে।
আইনি নোটিশে বাংলাদেশের পক্ষে স্থানীয় আদালতে এই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সদস্যদের অনেকেই বিদেশে পালিয়ে গেছেন, এবং তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব হবে না। এছাড়াও, বাংলাদেশে রাজনৈতিক কারণে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের নজির রয়েছে, যা ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
নোটিশে বাংলাদেশের সরকারকে ৩০ দিনের মধ্যে রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায়, মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে।