চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম সেভেন-স্টার মানের রিসোর্ট। তবে উদ্বোধনের ছয় মাস পার হলেও এটি একেবারে ফাঁকা পড়ে আছে। অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে রিসোর্টটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত হওয়ার পথে।
সেতু বিভাগের অধীনে নির্মিত এই বিলাসবহুল রিসোর্টটি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অযৌক্তিকভাবে কর্ণফুলী টানেলের ব্যয় বাড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য রিসোর্টটি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
৭২ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই রিসোর্টে রয়েছে ৩১টি আধুনিক বাংলো, যার একটি ভিআইপি। এছাড়া, রয়েছে ৩০টি রেস্টহাউস ও বিশ্রামাগার, নান্দনিক সুইমিংপুল, টেনিস কোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, হেলিপ্যাড, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মসজিদ এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের স্থাপনা।
রিসোর্টের ইনচার্জ মো. আবদুস সামাদ আজাদ জানান, “এটি অত্যন্ত বিলাসবহুলভাবে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনও কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।”
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, “চট্টগ্রামের মতো এলাকায় এত বড় রিসোর্ট কতটা লাভজনক হবে, তা স্পষ্ট নয়। কয়েকটি পরিবার সেখানে অবস্থান করলেও তা থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ সীমিত।”
সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালম আজাদ বলেন, “আমরা শিগগিরই এটি লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব। ভালো কোনও কোম্পানিকে লংটার্ম লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”
দশ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কর্ণফুলী টানেল প্রতিদিন প্রায় ২৭ লাখ টাকা লোকসান গুনছে। রিসোর্টটি ব্যবহার না হলে সেটিও লোকসানের তালিকায় যুক্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প অকার্যকর থাকলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি জনগণের করের অর্থের অপচয় বাড়বে।