মানব পাচারের শিকার হয়ে ভারতে তিন মাস: সীমান্তে বিজিবির অভিযান সফল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তপথে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে দুই বাংলাদেশি তরুণীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে সরাইল ব্যাটালিয়ন ২৫ বিজিবি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। আটককৃতরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং তিন মাস ধরে সেখানকার ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করছিলেন।
আটককৃত দুই তরুণী হলেন খুলনা সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে স্বপ্না বেগম এবং পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার হুগলা বুনিয়া ইউনিয়নের বুড়িয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের মেয়ে সোনিয়া আক্তার।
বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রায় তিন মাস আগে স্বপ্না ও সোনিয়া অবৈধভাবে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় প্রবেশ করেন। সেখানে তারা বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। ভারতের মানব পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে তারা ত্রিপুরায় যান। তবে দেশে ফেরার প্রয়াসে ফের চক্রটির সহযোগিতা নেওয়ার সময় তারা আটক হন।
তদন্তে উঠে আসে, ভারতীয় মানব পাচারকারী রাহুল দাস পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের বাংলাদেশের দালাল সাইমুনের হাতে তুলে দেন। এরপর সাইমুনের সহযোগিতায় আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর সীমান্তের ২০২২/৯-এস পিলার এলাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন।
ফকিরমুড়া বিজিবি ক্যাম্পের টহলরত জওয়ানরা তাদের আটক করেন। সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবি সদস্যরা সার্বক্ষণিক সতর্কাবস্থায় ছিলেন বলে জানান ২৫ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতেয়াজ। তিনি আরও বলেন, “সীমান্তে অবৈধ কার্যকলাপ ঠেকাতে আমরা তৎপর। আটককৃতদের রাতেই আখাউড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।”
বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে মানব পাচার একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্রিপুরাসহ ভারতীয় সীমান্তে প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনা ঘটে। অর্থনৈতিক সংকট এবং কর্মসংস্থানের অভাবের কারণে অনেকেই দালালদের প্রলোভনে পড়ে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পথে পা বাড়ান।
বিজিবির এই অভিযানের পর স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়া ও দালালদের সহযোগিতা নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ এবং দেশের আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
আটক দুই তরুণীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মানব পাচারে জড়িত থাকার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসনের বিষয়েও আলোচনা চলছে।