যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় পিয়াল হাসান (২৮) নামে এক যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। খুলনার চুকনগর ও ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ঝিকরগাছা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজা এবং একই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা মেহেদী হাসান। শামীম মোবারকপুর গ্রামের কামারুল ইসলামের ছেলে এবং মেহেদী হাসান নজরুল ইসলাম নজুর ছেলে।
গত ৯ নভেম্বর, নিহত যুবদল কর্মী পিয়াল হাসান কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিকরগাছা পৌর শহরের মিতালী হল রোডে আসামিদের হামলার শিকার হন। স্থানীয় সূত্র ও তদন্তে জানা যায়, তার ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথমে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে পিয়াল কাছের ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করলে, সেখানেই তাকে দা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পর, পিয়ালের বাবা বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় ছাত্রদল নেতা শামীমসহ মোট দশজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র্যাব ছায়া তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের অবস্থান চিহ্নিত করে। এরপর, শামীমকে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, যেখানে সে ঢাকায় পালানোর চেষ্টা করছিল। অপরদিকে, মেহেদী হাসান ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন; তাকে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত থেকে আটক করা হয়।
র্যাব-৬ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রাসেল জানান, মূলত ব্যক্তিগত পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। শামীমের পরিবারের সঙ্গে পিয়ালের পারিবারিক বিরোধ থেকেই এই পরিকল্পিত হত্যার সূত্রপাত।
এদিকে ঝিকরগাছা থানা পুলিশও অভিযান চালিয়ে সোমবার সকালে বেনাপোল সীমান্ত ও মোবারকপুর এলাকা থেকে আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঝিকরগাছা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ায় এটি দলীয় বিরোধ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে র্যাব ও পুলিশ জানায়, ঘটনাটি রাজনৈতিক হওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি দ্বন্দ্বের ফলেও ঘটেছে।
নিহত পিয়ালের পরিবার শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা চাই যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের যেন কঠিন শাস্তি হয়।” স্থানীয়রাও দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
—