ঢাকা, ১২ নভেম্বর — বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই আদেশ প্রদান করা হয়। এর আগে, সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন সময়ে হওয়া আন্দোলন ও সহিংস ঘটনার তদন্তের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে নিয়ে নানা সমালোচনা তৈরি হয়েছে, যা তদন্তের বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে। গত ২৫ আগস্ট দুদক তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। দুদক সূত্রে জানা যায়, তার এবং তার পরিবারের বিপুল সম্পত্তি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিদেশে সম্পত্তির মালিকানা এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আওয়ামী লীগের টিকিটে ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট সাতবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে পাঁচবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে, সাম্প্রতিক দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। সংসদ সদস্য হিসেবে তার কাজ এবং প্রভাব নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর গ্রেফতার ও রিমান্ডে পাঠানোর খবর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎপরতা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে বর্তমান সরকার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার অঙ্গীকার করেছে। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মামলা এবং তার পরবর্তী কার্যক্রম দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করতে পারে।