শেখ হাসিনার বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থান: সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্মান
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) জানায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের পক্ষ থেকে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “আমরা আগেই বলেছি যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান এটাই।” এর মাধ্যমে ভারতের সরকার শেখ হাসিনাকে শুধুমাত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তার বর্তমান রাজনৈতিক মর্যাদা বা অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো মন্তব্য করেনি।
এই মন্তব্যটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ, শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলে বিভিন্ন মতামত থাকলেও ভারত সরকার তার সাবেক প্রধানমন্ত্রীত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর তাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ওই বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে প্রশ্ন তোলা হলে তিনি পরিষ্কারভাবে শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই উল্লেখ করেন।
একজন ভারতীয় সাংবাদিক এই প্রশ্নটি করেছিলেন, যেখানে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ভারত শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করছে, নাকি তাকে ‘নির্বাসিত প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে গণ্য করছে। এই প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সোয়াল ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং শেখ হাসিনাকে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
যদিও ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও, তাকে ভারতে কী মর্যাদায় রাখা হয়েছে তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। বিশেষত, তাকে যে ‘নির্বাসিত প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে কোনো বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়নি, তা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।
এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যেখানে শেখ হাসিনার গঠনমূলক ভূমিকা এবং তার রাজনৈতিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন, তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তার অবস্থান এবং মর্যাদার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।
ভারত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার মর্যাদা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি, তার বর্তমান রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদার বিষয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তবে, ভারত সরকার যে তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করছে, সেটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।