গভীর রাতে হামলা: ১০-১২ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্তের আগ্রাসন
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক ব্যক্তি। সোমবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা পেতে গিয়ে নিহত হন শফি উদ্দিনের ছেলে আলেফ উদ্দিন (৩৫)। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে, এবং পরিবারের সদস্যরা হত্যার বিচার দাবি করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত শফি উদ্দিনের বাড়ির রান্নাঘরের গ্রিল কেটে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে মারধর শুরু করে এবং বাড়িতে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার খোঁজ করতে থাকে। ডাকাতরা বাড়ির সদস্যদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে তাদের মারধর করে এবং টাকা ও অলঙ্কার কোথায় রয়েছে জানতে চায়।
হঠাৎ, আলেফ উদ্দিন ডাকাতদের চিনে ফেললে, তারা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ সময় আলেফের মা হাসিনা বেগম বলেন, “তারা আমার চোখের সামনে আমার ছেলেকে হত্যা করে। আমি তাদের বিচার চাই।”
ডাকাতরা বাড়ি থেকে ১০-১২ হাজার টাকা এবং ৬-৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে মহিলাদের শরীরে থাকা স্বর্ণালঙ্কারও ছিনিয়ে নেয়। শফি উদ্দিন জানান, ডাকাতি হওয়ার পরে আলেফকে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, “রাতের অন্ধকারে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো খুবই ভয়ঙ্কর।”
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সানোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, এটি একটি পরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনা। হত্যার শিকার যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হবে এবং মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান শুরু করেছি এবং খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হবে।”
কুড়িগ্রামে এর আগে কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে খড়িবাড়ী বাজারের পাশে একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা এবং ধরলা সেতুর উপরে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয়কর্মীকে গলা কেটে ৯০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। এসব ঘটনার কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হত্যার শিকার আলেফ উদ্দিনের পরিবার এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং তারা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছেন। আলেফের মা বলেন, “আমি চাই, আমার ছেলের হত্যার সঠিক বিচার হোক। আমরা খুবই ভীতির মধ্যে আছি।”
এখন দেখার বিষয়, পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনায় কিভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং কিভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এলাকাবাসীর মাঝে ভীতি দূর করতে পারে।