লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযানের ব্যর্থতা: ৯৫ সেনার মৃত্যু, কোনও অঞ্চল দখলে নেই
লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযানের এক মাস পার হয়েছে, কিন্তু ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক। অভিযান শুরুর পর থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো অর্জন না পাওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের এই অভিযানের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯৫ জনের বেশি সেনা নিহত হয়েছে। গত মাসের শুরুতে ইসরায়েল সীমিত পরিসরে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান শুরু করে, যেখানে তারা নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য ৫০ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করেছে।
হিব্রু ভাষার পত্রিকা ইয়েদিয়থ আহরোনোথের বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর জানাচ্ছে, দক্ষিণ লেবাননে এখনও পর্যন্ত একটি গ্রামও দখল করতে সক্ষম হয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের এই অপারেশনে ৫টি ডিভিশন মোতায়েন করা হয়েছে, যা ২০০৬ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি। কিন্তু তাতেও ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলি বাহিনী অপারেশন চালানোর জন্য যে সামরিক কৌশল গ্রহণ করেছে, তা সঠিক নয়।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন যে, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কৌশলগত পরিকল্পনার সামনে ইসরায়েলি বাহিনী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের কয়েক স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সাঁজোয়া যানগুলোর ওপর নিখুঁত হামলা চালিয়ে প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের মোকাবেলা করছে। তারা দাবি করছে যে, তারা ইতোমধ্যে ইসরায়েলের ৪২টি মেরকাভা ট্যাংক, ৪টি বুলডোজার, দুটি হুমার, একটি সাঁজোয়া যান এবং একটি ট্রুপ ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে।
প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মতে, এই সংঘাতে ৯৫ জনের বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছে। তারা তাদের সাফল্যের এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলছে যে, এটি তাদের পরিকল্পনার কার্যকারিতা নির্দেশ করে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদের সামরিক সক্ষমতার অভাব বুঝতে পারছে।
লেবাননের এই স্থল অভিযানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগও পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি ইসরায়েলি সেনাদের এই অভিযানকে অমানবিক বলে মন্তব্য করেছে এবং জানিয়েছে যে, স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তার ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, চলমান পরিস্থিতির কারণে লেবাননের মানুষের মাঝে একটি নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
লেবাননে ইসরায়েলের চলমান অভিযান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। যেভাবে প্রতিরোধ যোদ্ধারা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করছে, তাতে ইসরায়েলি বাহিনীর ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদি এই অবস্থান অব্যাহত থাকে, তাহলে ইসরায়েলি বাহিনী আরও বড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতি কিভাবে পরিবর্তিত হয় এবং ইসরায়েল কি নতুন কৌশল গ্রহণ করে।