তুরস্ক সরকারের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত সাত বাংলাদেশি তরুণের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। এই সাহায্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে এবং এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহযোগিতা। রবিবার (৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুরস্কের প্রতি একটি বিশেষ অনুরোধ জানায়। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে তুরস্ক সরকার এই পদক্ষেপ নেয়। বাংলাদেশি তরুণদের উন্নত চিকিৎসার জন্য এই মানবিক সাহায্য দিচ্ছে তুরস্ক।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের এক বৈঠকে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করা হয়।
গত ২৭ আগস্ট, বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মধ্যে একটি টেলিফোন আলাপ হয়। সেই আলাপে এরদোয়ান বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই প্রতিশ্রুতি ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার একটি বড় পদক্ষেপ।
এরদোয়ানের প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৩-১৫ অক্টোবর তুরস্কের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। সফরের সময় নির্বাচন ব্যবস্থা, আর্থিক খাত, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে তাদের বৈঠকগুলো অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল।
তুরস্কের এই উদ্যোগ কেবল মানবিকতার নিদর্শন নয়, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বের নিদর্শন। আহত ছাত্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান তুরস্কের উদারতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি মাইলফলক।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আহত সাতজন ছাত্র তুরস্কে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। তাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি নিশ্চিত করতে তুরস্কের অভিজ্ঞ চিকিৎসক দল তাদের চিকিৎসা করবে। এটি তাদের সুস্থতার পথে একটি বড় পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক এই উদ্যোগের মাধ্যমে আরও দৃঢ় হবে। তুরস্কের এই মানবিক সহায়তা ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে।
তুরস্কের এই মানবিক উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল আশীর্বাদ। আহত সাতজন তরুণের উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তুরস্ক কেবল তাদের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে না, বরং দুই দেশের সম্পর্ককেও আরও সুদৃঢ় করবে। এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও মানবিক সম্পর্কের একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।