ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১১টায় এক বিশেষ অভিযানে সেনাবাহিনী ৭ জনকে আটক করেছে। এই অভিযানে ডেয়ারিং টাইগার্স ২৩ ইস্ট বেঙ্গল-এর ৯টি টিম অংশগ্রহণ করে। অভিযানের সময় ২টি পিস্তল, ২০ রাউন্ড বুলেট, এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। মূলত মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেলকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে এ অভিযান হলেও, সোহেল পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের আটক করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী।
সোমবার রাতের এই অভিযান চলে গভীর রাত পর্যন্ত। সেনাবাহিনীর সদস্যরা জেনেভা ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন এবং নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে তল্লাশি চালান। এই সময় ক্যাম্পবাসীদের আতঙ্কিত হতে দেখা গেলেও, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দারা সহায়তা করেন। আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে বুনিয়া সোহেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ছিলেন বলে জানা গেছে। এই সহযোগীদের বিরুদ্ধে পূর্বে মাদক ব্যবসা, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
অভিযানের সময় উদ্ধারকৃত ২টি পিস্তল এবং ২০ রাউন্ড বুলেট সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে বিশেষভাবে এসেছে। দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এসব অবৈধ অস্ত্র বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। দেশীয় অস্ত্রগুলোর মধ্যে চাকু, রডসহ বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র পাওয়া যায়, যেগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহৃত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, মাদক ও সন্ত্রাস দমনে তাদের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে এই অঞ্চলে মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের দমনে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক অভিযানগুলোতে বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হওয়ায় মোহাম্মদপুর এলাকাবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
জেনেভা ক্যাম্পসহ মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দারা এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন। গত কয়েক বছরে এই এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মাদক ব্যবসার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পায়। অভিযান পরবর্তী সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে আরো নিরাপদ বোধ করছেন এবং নিয়মিত অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রভাব বেড়েছে, যা স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। সন্ত্রাস দমন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে আসছে। তবে গত দুই দিনের বিশেষ অভিযানে যে সাফল্য এসেছে, তা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় নতুন দিক নির্দেশনা দিতে পারে।
সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখপাত্র বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে। মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে মোহাম্মদপুরসহ আশেপাশের এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।