রংপুরের পীরগাছায় সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে একটি ইউনিয়নে ‘অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটি’ গঠন করেছে জামায়াতে ইসলামি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে এটি “জামায়াতের হিন্দু শাখা” হিসেবে প্রচার করা হলেও, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ।
তিনি জানান, এটি কোনো সাংগঠনিক কমিটি নয়; বরং অমুসলিম নাগরিকদের সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাতে পীরগাছা উপজেলা জামায়াত অফিসে পীরগাছা সদর ইউনিয়নে ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ, সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান, দফতর সম্পাদক জাকির হোসেন, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ভবেশ চন্দ্র বর্মণ, এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বৈঠক শেষে ‘অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ভবেশ চন্দ্র বর্মণকে সভাপতি এবং ওষুধ ব্যবসায়ী বিজন চন্দ্র দাসকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সহ-সভাপতি হিসেবে দেবী চৌধুরানী ডিগ্রি কলেজের প্রদর্শক তাপস চন্দ্র রায় এবং সহ-সম্পাদক হিসেবে কিসামত ঝিনিয়া সনাতন সংঘের সভাপতি সুধারঞ্জন বর্মণ নিযুক্ত হন। এছাড়াও অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান দেউতি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বর্মণ।
পীরগাছা উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ বলেন, “বৈঠকে হিন্দু শাখা নামে কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে সামাজিক সেবামূলক উদ্যোগ। অসুস্থতা, দুঃস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রক্তদানের মতো সেবা কার্যক্রমে অমুসলিম নাগরিকদের সহযোগিতা দেওয়ার লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি কোনো সাংগঠনিক কমিটি নয়।”
তিনি আরও বলেন, “পত্র-পত্রিকা ও ফেসবুকে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এর আগেও এ ধরনের নাগরিক সেবামূলক অনেক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। জামায়াত প্রকাশ্যে কাজ না করার কারণে কমিটিগুলো আগের মতো সক্রিয় ছিল না।”
অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটির লক্ষ্য হলো পীরগাছা এলাকার অমুসলিম জনগোষ্ঠীর সামাজিক সেবা নিশ্চিত করা। এটি জামায়াতে ইসলামির একটি মানবিক উদ্যোগ হিসেবে গৃহীত হলেও, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এমন দাবি অস্বীকার করা হচ্ছে।