আজ মঙ্গলবার বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী অবস্থান নেয়, যা একপর্যায়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় উত্তেজনা আরও বাড়ে এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের অবস্থা তৈরি হয়।
আজ দুপুর থেকে বঙ্গভবনের সামনে জড়ো হতে শুরু করে বিক্ষোভকারী দলগুলো। তাঁরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়কের একপাশ বন্ধ করে দেন এবং রাত আটটার দিকে দুই পাশের সড়কই বন্ধ করে দেন, ফলে আশপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন, যার মধ্যে অন্যতম স্লোগান ছিল, “এক দফা এক দাবি, চুপ্পু তুই কবে যাবি”।
রাত ৮টা ২০ মিনিটে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবনের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৮টা ২৫ মিনিটে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, যা বিক্ষোভকারীদের আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে। এর জেরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে এবং পুলিশ সদস্যরা বঙ্গভবনের দিকে সরে যান। পরে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবন ও রাজউকের মাঝের স্থান থেকে পুলিশের জলকামান সরিয়ে দেয়।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার পর সেনাসদস্যরা এসে বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তেজনাকর ছিল এবং বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবনের সামনের সড়কে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভকারী দলগুলোর প্রধান অভিযোগ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে। তাঁদের ভাষ্যমতে, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শপথ ভঙ্গ করেছেন এবং নৈতিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ‘রক্তিম জুলাই ২৪’ ব্যানারে বিক্ষোভকারী সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ বলেন, রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি বলে মন্তব্য করেছেন, যা তাঁকে রাষ্ট্রপতির পদে থাকার অযোগ্য করে তুলেছে। সাইফুদ্দীন আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির একমাত্র সমাধান হচ্ছে তাঁর পদত্যাগ। তিনি পদত্যাগ করলেই তাঁরা রাজপথ থেকে সরে যাবেন।
‘ছাত্রজনতার ঐক্যমঞ্চ’ ব্যানারে বিক্ষোভকারী আরিফুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার ‘দোসর’ এবং তাঁর পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। তাঁদের দাবি, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দিচ্ছেন, যা তাঁরা মেনে নেবেন না।
বিক্ষোভের কারণে পুরো এলাকায় যানজট এবং জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকে।