মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অংশে, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শুরু করে বঙ্গভবন এলাকা পর্যন্ত দিনভর চলেছে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও এ বিক্ষোভের বিস্তৃতি ঘটেছে। ‘মিথ্যাচার ও শপথভঙ্গের’ অভিযোগে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এর সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতিক্রিয়াও বিষয়টিকে আরও তীব্র করেছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই প্রসঙ্গে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, আইন ও সংবিধান অনুযায়ী তাকে অপসারণের সুযোগ রয়েছে কি না।
ছাত্র আন্দোলনের উত্তাল বিক্ষোভ
মঙ্গলবার ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রদের আয়োজিত বিক্ষোভে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি সরাসরি ওঠে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জনগণের বিশ্বাসের প্রতি অবিচার করেছেন এবং শপথভঙ্গ করেছেন। এর ফলে তিনি আর রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্য নন। ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ছাত্ররা মিছিল, বিক্ষোভ, স্লোগানের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা পরিষদের প্রতিক্রিয়া
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সোমবার তার দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন, যা শপথভঙ্গের শামিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের বক্তব্য দিলে রাষ্ট্রপতি পদে থাকা যায় কি না, তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।’ উপদেষ্টা পরিষদের মঙ্গলবারের বৈঠক শেষে উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আইন উপদেষ্টার মতামত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বক্তব্য। অর্থাৎ, সরকারও রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বক্তব্যের ব্যাপারে সমালোচনামুখর।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সাথে আলোচনা
মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল রাষ্ট্রপতির পদ এবং ভবিষ্যতে তার স্থলে কে আসতে পারেন তা নিয়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তারা প্রধান বিচারপতিকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি করার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নীরব অবস্থান
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণ কেবল সময়ের ব্যাপার, বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সরাসরি কোনো মন্তব্য আসেনি। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তারা এখনো কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান নেয়নি। বিএনপির হাইকমান্ড দলের নেতাদের এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে।
রাষ্ট্রপ