মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চার কর্মকর্তাকে যৌথ বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখে ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি পালনের অভিযোগে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা তিন ঘণ্টার বেশি স্থায়ী ছিল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় জেলার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এই কর্মসূচির কারণে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করা হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথ বাহিনী এবং পুলিশ দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে উপস্থিত হয়। এরপর সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে বিকেল ২টা ৩০ মিনিটের দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় সচল করা হয়।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম (প্রশাসন) রাজিবুল হাসান, এজিএম (ইএমসি) মো. হাসিব উদ্দিন, এজিএম গিয়াস উদ্দিন খান শাকিল এবং হরিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম সামিউল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। তাদের নেতৃত্বেই পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করছিলেন বলে জানা যায়।
এই কর্মসূচির পেছনে মূল কারণ ছিল দুর্নীতির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা। সেই বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের স্ব-পদে বহাল করার দাবিতে মানিকগঞ্জে বিদ্যুৎ বন্ধ করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সারাদেশে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন মানিকগঞ্জে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবায় ব্যাঘাত ঘটে।
এই ঘটনার সময় মেজর মিনহাজ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওয়ারেস আলী এবং সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহসহ যৌথ বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের হেফাজতে নেওয়ার পর তদন্তের মাধ্যমে ঘটনা পরিষ্কার হওয়ার পরই তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সুলতান নাছিমুল হকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মন্তব্য দিতে রাজি হননি।