ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর সরকারের অন্যতম শক্তিশালী সমর্থক দেশটির সেনাবাহিনী। বিরোধীদলীয় নেতারা সেনাবাহিনীর প্রতি জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার, বিতর্কিত নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে তারা সেনাবাহিনীর কাছে এ আহ্বান জানান। তবে দেশটির সরকার জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করা হবে।
গত ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন পরিষদ। তবে বিরোধীরা ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, বিরোধী নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদো ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের জয়ী ঘোষণা করে এবং সরকারের বিরোধিতা ও বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
জনগণ নির্বাচন ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে। সোমবার কাউন্সিল জানায়, তারা মাদুরোর অনুরোধে সব নথি উচ্চ আদালতে জমা দিয়েছে, তবে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
বিরোধীরা এক বিবৃতিতে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘সেনাবাহিনীর কমান্ডাররা মাদুরোর সঙ্গে জোট বেঁধে তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন, অথচ তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। জনগণ ২৮ জুলাই ভোট দিয়েছে এবং তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। আপনারা সেটা জানেন।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বিরোধী প্রার্থী গঞ্জালেজ উরুতিয়া নিরাপত্তা বাহিনীকে বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-নিপীড়ন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধীদের বিবৃতির জবাবে কৌঁসুলিরা পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনে মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে এবং বিরোধী নেতারা সংবিধান ও আইন লঙ্ঘন করে নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করেছেন।
বিরোধীদের এই বিবৃতির পরেই ভেনেজুয়েলায় ব্যাপক বিক্ষোভের সূচনা হয়। রাজধানী কারাকাসসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। মানবাধিকার সংস্থা জানায়, সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১১ জন নিহত এবং হাজারেরও বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। বিরোধী নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদো দাবি করেন, সংঘাতে অন্তত ২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।