ঢাকা, ৮ অক্টোবর ২০২৪: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কাজগুলো দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করতে গিয়ে কিছু বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ডিসি নিয়োগে দুই দফায় কোটি কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে তদন্তের জন্য তিন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সচিব, জেলা প্রশাসক এবং বিদেশে পদায়নেও কিছু ভুল পাওয়া গেছে। তবে মন্ত্রণালয়ের বড় অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জনপ্রশাসন সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা এবং সরকারি কর্মচারীদের আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা।
প্রতিবছর সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কমিটি গঠন এবং অবসর ও ওএসডি বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিন স্তরে (উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব) ৪৬০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ৫১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৫ জন কর্মকর্তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে এই অর্জনের মাঝে ডিসি নিয়োগের ঘুস লেনদেনের অভিযোগ এবং কিছু অনিয়ম প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কাজগুলো আরও সচেতনতা ও সাবধানতার সঙ্গে করা হলে এই বিতর্ক এড়ানো সম্ভব ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান বলেন, “আমাদের অর্জনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিস্তারিত জানানো হবে। সেখানে কাজের বিবরণ দেওয়া থাকবে।” তিনি এর বাইরে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, “অল্প সময়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে কাজগুলো করেছে তা সন্তোষজনক। তবে কিছু বিতর্কিত বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা যেত। কাজের গতি বাড়াতে হবে, কিন্তু তা যেন ভুলের কারণ না হয়।”
তিনি আরও বলেন, “যত দ্রুত কাজ করার প্রয়োজন, ততটাই ধীরে সুস্থে এবং ভেবেচিন্তে এগিয়ে যেতে হবে। এতে ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল এড়ানো সম্ভব হবে।”
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দ্রুতগতিতে বেশ কিছু বড় কাজ সম্পন্ন করলেও, কিছু ভুল এবং ঘুস লেনদেনের অভিযোগ তাদের সাফল্যকে ম্লান করেছে।