মাদারীপুরে সরকারি এতিমখানা সংস্কারের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মাদারীপুর এতিমখানা শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো. সাইফুজ্জামান এবং মাদারীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন সরকারের যোগসাজশে নিজেরাই কাজ সম্পাদন করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। নামমাত্র কাজ দেখিয়ে বিল উত্তোলনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করছেন তারা।
চাঁদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লক্ষ্মি নারায়ণ ভান্ডার’-এর নামে কার্যাদেশ প্রদান করা হলেও কোনো পত্রপত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি।
দীর্ঘদিনের অনিয়মের অভিযোগ
২০০৪ সালে মাদারীপুর শহরের খাগদি এলাকায় এতিম ও অনাথ শিশুদের জন্য নির্মিত এই সরকারি ভবনের বয়স মাত্র ২০ বছর। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা সংস্কারের নামে ব্যয় করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ১৮ লাখ টাকা সংস্কার ব্যয় ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংস্কার কাজের বিল দাখিল করা হয়েছে, যদিও কী কী কাজ করা হয়েছে তার কোনো বিস্তারিত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ঠিকাদারের অনুপস্থিতি ও স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সংস্কার কাজ যথাযথভাবে না করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করা হচ্ছে। চাঁদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিক ভরত চন্দ্র ঘোষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কাজ সম্পর্কে জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো. সাইফুজ্জামান এবং উপ-পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন সরকার বিল দাখিল করেছেন, যদিও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয়দের দাবি ও তদন্তের আহ্বান
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল বলেন, “নামমাত্র সংস্কার করে পুরো টাকাই লুটপাট করা হচ্ছে। কোনো কাজ চোখে পড়ে না। ঠিকাদার চাঁদপুরে থাকে, কখনও এখানে আসে না। আমরা চাই, দুদক এ বিষয়ে তদন্ত করুক।”
এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল কৃত্তনীয়া জানান, তিনি এখনো কাজের ব্যাপারে খোঁজখবর নেননি, তবে শীঘ্রই বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এই অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে, বিশেষত এতিম শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই ভবনের সংস্কার কাজে দুর্নীতির সুরাহা চাচ্ছেন তারা।