ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম যেখানে ২০০০ টাকার কাছাকাছি, সেখানে একই ইলিশ ভারত যাচ্ছে ১২০০ টাকায়! এই বিষয়টি সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তুলেছে। কেন এমন হচ্ছে, আর এর পেছনে কারণই বা কী?
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের বাজারে। সেখানে ইলিশের চাহিদা বরাবরই তুঙ্গে। বাংলাদেশি ইলিশের স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বেশ সাড়া দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যখন দেশের বাজারে ইলিশের দাম এত বেশি, তখন ভারত কীভাবে এত কম দামে ইলিশ পাচ্ছে?
রপ্তানি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সরকারের দেওয়া বিশেষ শুল্ক সুবিধার কারণে ইলিশ রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ কিছু খরচ কমে আসে। ফলে, ভারতীয় বাজারে ইলিশের দাম তুলনামূলকভাবে কম রাখা সম্ভব হয়। রপ্তানি ইলিশের দাম নির্ধারণে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করা হয়, যেমন মাছের পরিমাণ, আকার ও বাজারের চাহিদা। এসব কারণে ইলিশের দাম ভারতীয় বাজারে কম থাকে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাবও একটি বড় কারণ। বর্ষাকালে ইলিশের সরবরাহ বেড়ে গেলে দাম কিছুটা কমলেও, বর্ষার পর মাছের চাহিদা বাড়ে এবং দামও বেড়ে যায়। এদিকে, রপ্তানি ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতি ও নিয়ম অনুযায়ী ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রিত থাকে, যা ভারতীয় বাজারে কম দামে ইলিশ সরবরাহ সম্ভব করে তোলে।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলিশের আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি, ভারতীয় রুপির মান এবং পরিবহন খরচেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া, ভারতীয় ক্রেতারা বাছাইকৃত ও ছোট সাইজের ইলিশ কেনায় আগ্রহী, যা তুলনামূলকভাবে সস্তা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে এবং দামের ভারসাম্য রাখতে অভ্যন্তরীণ বাজারে মাছের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। রপ্তানি ও স্থানীয় বাজারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা গেলে, উভয় বাজারেই সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন চিন্তিত, তেমনি রপ্তানির ক্ষেত্রে কম দামে ইলিশ বিক্রি নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। তবে, সরকারের নীতি এবং ব্যবসায়িক কৌশলের ওপর নির্ভর করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এখন দেখার বিষয়, এ নিয়ে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
—