চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগ কর্মী হায়াত উল্লাহকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শহীদ আবদুর রব হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ঘটনাস্থলে যা ঘটেছে
হায়াত উল্লাহ, যিনি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের এক্সপ্রেস (ভিএক্স) গ্রুপের কর্মী, হল থেকে নিজের মালামাল নিয়ে ক্যাম্পাসে আসার সময় হামলার শিকার হন। শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তিনজন তাকে ধরে আব্দুর রব হলে নিয়ে যায় এবং লাঠি দিয়ে মারধর করে।
প্রাপ্ত তথ্য
হায়াত উল্লাহর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আবাসিক হল থেকে নিজেদের মালামাল সরানোর নির্দেশনা দেয়। ওই দিন সকালে তিনি তার মালামাল নিতে আসার সময় হামলার শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হামলার পেছনের কারণ
সূত্রে জানা গেছে, হায়াত উল্লাহ ছাত্রলীগের ভিএক্স উপগ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, তিনি এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদেরকে ‘মীরজাফর’ উল্লেখ করে হুমকি দিয়েছেন। এতে করে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তাদের দাবি, বিচারবহির্ভূত নির্যাতন ছাত্রলীগের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর সমর্থন করে না। তারা ঘটনাটির তদন্ত এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া, তারা হায়াত উল্লাহ যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে সেটি খতিয়ে দেখার দাবি করেছেন।
প্রশাসনের বক্তব্য
প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে বলেছেন, মারধরের খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে আব্দুর রব হলে গিয়ে হায়াত উল্লাহকে গেস্টরুমে দেখতে পান। তিনি বলেন, “হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা নেই, তাই তাকে বন্ধুদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, হল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অফিসিয়ালি জানানো হবে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।