জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণআন্দোলনের উল্লেখযোগ্য প্রভাব তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষত তরুণ সমাজ, একনায়কতন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে যে সাহসী অবস্থান নিয়েছে, তা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে।” শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিটে দেওয়া এই ভাষণে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, “জুলাই-আগস্টে সংঘটিত পরিবর্তনের মাধ্যমেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের সামনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।”
ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, “প্রথমে একটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হিসেবে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ পরে গণআন্দোলনে রূপ নেয়। বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সোচ্চার হয়েছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজ তাদের অদম্য সংকল্প এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে। তাদের এই সাহসিকতা ও সংগ্রামই বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে এবং দেশকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে দায়িত্বশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে এই আন্দোলন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। তারা কেবল রাজনৈতিক অধিকার নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। তাদের আত্মত্যাগ ও দৃঢ়সংকল্প আমাদের অভিভূত করেছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করে আমাদের তরুণরা বুক পেতে দাঁড়িয়েছিল, স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা জীবন উৎসর্গ করেছিল। শত শত মানুষ তাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে, কিন্তু তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পিছপা হয়নি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “মায়েরা, দিনমজুরেরা, এবং শহরের অগণিত মানুষও তাদের সন্তানদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিল রাজপথে। তাঁরা তপ্ত রোদ, বৃষ্টি, এমনকি মৃত্যুর ভয় উপেক্ষা করে দীর্ঘকাল ধরে চলা ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করেছে।”
ড. ইউনূস তার ভাষণের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ বিশ্বনেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন।