ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর:
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান দীর্ঘ প্রবাসের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় তুরস্ক থেকে একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। দেশের রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক অঙ্গনে তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবনের পর তার এই প্রত্যাবর্তন রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক মহলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
প্রবাস থেকে প্রত্যাবর্তন
ড. মাহমুদুর রহমান গত কয়েক বছর ধরে তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। বাংলাদেশে একাধিক মামলা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারেননি। তার অনুপস্থিতিতেও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিদেশি মিডিয়ায় বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। তার প্রবাসকালীন সময়েও তিনি সাংবাদিকতা এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সক্রিয় ছিলেন।
বিমানবন্দরে উত্তেজনা
তুরস্ক থেকে দেশে ফেরার খবর পাওয়ার পর থেকেই তার সমর্থকরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো হতে শুরু করেন। সকালে ফ্লাইট অবতরণের পর বিমানবন্দরে একাধিক রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। ড. মাহমুদুর রহমানকে বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তার সমর্থকরা তাকে ঘিরে বিভিন্ন শ্লোগান দেন এবং তার নিরাপদে দেশে ফেরার জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ প্রবাসজীবনের কারণ
ড. মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একাধিক মামলা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই রাজনৈতিক কারণে দায়ের হয়েছে বলে তার সমর্থকদের দাবি। তিনি অনেকদিন ধরে সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এবং তার প্রকাশিত সংবাদগুলোতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করা হতো। এসব সমালোচনার কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার এবং মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।
তার অনুপস্থিতিতে সাংবাদিকতা
তুরস্কে অবস্থানকালীন সময়েও ড. মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকতার পেশা থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার নেতৃত্বে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ হওয়ার পরও তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করে আসছিলেন।
প্রত্যাবর্তন কী বার্তা বহন করে?
ড. মাহমুদুর রহমানের দেশে ফিরে আসা কেবল একজন ব্যক্তির প্রত্যাবর্তন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা ও রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা চলছে। অনেকেই মনে করছেন, তার দেশে ফেরার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে তিনি যদি আবারও সক্রিয়ভাবে সাংবাদিকতা এবং রাজনীতিতে অংশ নেন, তবে তা বর্তমান সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ড. মাহমুদুর রহমান তার দেশে ফেরার পর কী পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তিনি দেশে ফেরার পর তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একইসঙ্গে তিনি আবারও সাংবাদিকতার মঞ্চে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার সমর্থকরা মনে করছেন, তার প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করবে।
সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ড. মাহমুদুর রহমানের দেশে ফেরার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার প্রত্যাবর্তনকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য ইতিবাচক মনে করছেন। আবার অনেকেই তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন।
ড. মাহমুদুর রহমানের দেশে ফিরে আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।