ভৈরবে অবৈধ রেস্টুরেন্ট এবং কফি হাউজে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৪২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে। রেস্টুরেন্টগুলোতে কাপড় দিয়ে ঘেরা কক্ষগুলোতে অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। তবে, পরবর্তীতে অভিভাবকদের ডেকে এনে মুচলেকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভৈরব সেনা ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল ফারহানা আফরিন।
রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার মানিকদী এবং কুলিয়ারচর সংযোগ স্থল জিল্লুর রহমান সেতু সংলগ্ন এলাকায় এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী এই অভিযান চালায়, যেখানে মানিকদী এলাকার ৮টি রেস্টুরেন্ট ও কফি হাউজে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা যায়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এসব রেস্টুরেন্টে এসে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হচ্ছিল।
অভিযানের সময়, সেনাবাহিনী রেস্টুরেন্টগুলোতে ঢুকে প্রতিটি কক্ষে কাপড় দিয়ে ঘেরা পরিবেশ দেখতে পায়, যা বাইরে থেকে সন্দেহজনক মনে হয়। ভেতরে প্রবেশ করার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপের সত্যতা পান এবং ৪২ জন ছাত্রছাত্রীকে আটক করেন। আটককৃত শিক্ষার্থীরা স্থানীয় স্কুল এবং কলেজের ছাত্রছাত্রী বলে জানা যায়।
আটকের পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের সন্তানদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত করেন। লে. কর্নেল ফারহানা আফরিন বলেন, “আমাদের সন্তানদের উপর নজর রাখা আমাদের দায়িত্ব। তারা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, তা আমাদের জানতে হবে। শিক্ষার্থীদের এসব রেস্টুরেন্টে দেখে আমি অবাক হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন ও কর্মসংস্থান নিয়ে তাদের দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং অভিভাবকদের মুচলেকা নিয়ে তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে।”
অভিযানের সময় রেস্টুরেন্ট মালিকদেরকেও সতর্ক করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপ পরিচালনা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। লে. কর্নেল ফারহানা আফরিন বলেন, “রেস্টুরেন্টগুলোতে কাপড় দিয়ে ঘেরা কক্ষগুলো অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। আমরা এই অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধের জন্য রেস্টুরেন্ট মালিকদের কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছি।” সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, রেস্টুরেন্ট মালিকদের কাপড় দিয়ে কক্ষ ঘেরা এবং অন্যান্য অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
অভিযান শেষে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রেস্টুরেন্টগুলোতে ব্যবহৃত পর্দাগুলো অপ্রয়োজনীয় ও অনৈতিক কার্যকলাপে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে একটি পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, এ ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।