নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে ব্যক্ত করেছেন, রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকার পরও তিনি দল থেকে যথাযথ মূল্যায়ন পাননি এবং বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখে পড়ে হতাশ হয়ে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তরিক উল্যাহ বীর বিক্রমের ছেলে, সেনবাগে লায়ন মানিক নামে পরিচিত। ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে তার বাড়িতে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর এবং একাধিক মামলায় জড়িয়ে পড়ায় তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেন, ব্যবসা ও রাজনীতি একসঙ্গে চালানো সম্ভব নয়। তার মতে, রাজনীতি বর্তমানে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন শেষ হতেই আরেকটি কর্তৃত্ববাদ তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থার মধ্যে থেকে রাজনীতির প্রতিহিংসাপরায়ণতা, অসৎ ও নোংরা চর্চা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সেনবাগের মানুষের কল্যাণে কাজ করার উদ্দেশ্যে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন। তবে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া এবং একতরফা ভোটের মাধ্যমে অন্য প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার কারণে তার মতো ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন হয়নি। সাম্প্রতিক একতরফা নির্বাচনে তার মার্কেটেও হামলা ও ভাঙচুর করা হয়, যা তাকে অত্যন্ত বেদনাদায়ক করেছে।
জাহাঙ্গীর আলম ফেসবুকে আরও লিখেছেন, তিনি সেনবাগের মানুষের জন্য কাজ করতে সবসময় প্রস্তুত আছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে গেলেও সমাজসেবায় তার অংশগ্রহণ অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘‘আমি অনুভব করেছি, মানুষ আমাকে একজন রাজনৈতিক কর্মী নয়, একজন সমাজকর্মী হিসেবে বেশি ভালোবাসেন।’’ ভবিষ্যতেও সেনবাগের উন্নয়নের জন্য তিনি তার সাধ্যানুযায়ী কাজ করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জাহাঙ্গীর আলমের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে জাহাঙ্গীর আলম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন