তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) একটি প্রকল্প ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’। এ প্রকল্পটি ‘বাংলা প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত। ১৫৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পে একচেটিয়া কাজ পেয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকল্পের টেন্ডার থেকে ৩৩ শতাংশ কাজ অর্জন করেছে। তবে প্রকল্পের যৌক্তিকতা এবং ভবিষ্যত সফলতা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
২০১৬ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ১৫৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ১৬টি কম্পোনেন্টের জন্য প্রায় এক ডজন প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেয়েছে, যার মধ্যে বেক্সিমকো ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি অংশ পেয়েছে। গিগাটেক, সিস্টেক, এবং ড্রিম ডোরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ২৩ কোটি ৯৮ লাখ ৮১ হাজার টাকার কাজ পেয়েছে, যা মোট প্রকল্পের এক-তৃতীয়াংশ।
বেক্সিমকো কম্পিউটার্স এবং গিগাটেক প্রতিষ্ঠানগুলো বেক্সিমকো গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। গিগাটেকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান। বেক্সিমকো এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক বড় ধরনের প্রকল্প পেয়ে টেন্ডারের জগতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। অন্যদিকে, রিভ সিস্টেমস নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান নকল কাজ জমা দেওয়ার কারণে প্রকল্পের কাজ বাতিল করেছে, তবে প্রতিষ্ঠানটি আরো তিনটি টেন্ডারের কাজ পেয়েছে।
প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট ইতিমধ্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পের কার্যকারিতা এবং ভবিষ্যত ব্যবহার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রকল্পের শেষে এসব রিসোর্সের ভবিষ্যৎ কী হবে তা স্পষ্ট নয়, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মুখে প্রকল্পের সফলতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব করিমের দাবি, বিদেশিনির্ভরতা কমাবে এই প্রকল্প এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে। তবে টেক জায়ান্টদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কঠিন হবে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।