ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর – নোবেল বিজয়ী এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গতকাল এক মাস পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, “প্রথম কাজ হবে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা।” তিনি আরও বলেন, আহত শত শত মানুষ, যাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের জন্য একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শহীদদের পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “যাদের শাহাদাতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে, আমরা তাদের কখনোই ভুলবো না।”
গুম ও আয়নাঘর প্রসঙ্গে প্রতিশ্রুতি
ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন যে, সরকার সম্প্রতি বলপূর্বক গুম থেকে সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন সনদে স্বাক্ষর করেছে। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হচ্ছে।” নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে সহানুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা আপনাদের বেদনায় সমব্যথী।”
ড. ইউনূস আরও জানান, আয়নাঘরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং খুব শিগগিরই গুমের শিকারদের কষ্ট সম্পর্কে বিশদ তথ্য জানা যাবে।
সংস্কার উদ্যোগের সাফল্য
তিনি আরও জানান, গত মাসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সরকার গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে সম্পাদক, ব্যবসায়ী নেতা, সুশীল সমাজের নেতা এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের মাধ্যমে সরকার সমর্থন পেয়ে আসছে। বিদেশি বন্ধুদের সহযোগিতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উৎসর্গকেও তিনি প্রশংসা করেন।
শহীদ পরিবারদের প্রতি শ্রদ্ধা
প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেন, “আমি শহীদ পরিবারের সদস্যদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাবো এবং তাদের সঙ্গে দেখা করবো। আমরা কখনোই শহীদদের স্বপ্নের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবো না।”
একতা ও সমন্বয়ের আহ্বান
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুঃশাসন ও স্বৈরাচার দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত পূরণ করা। এর জন্য একতা ও সমন্বয় প্রয়োজন।” তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, “শহীদদের রক্ত এবং আহত ভাইবোনদের আত্মত্যাগকে আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। আজ আমরা প্রতিজ্ঞা করলাম, তাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়বোই।”