উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে ৩০ জন কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং-উন। দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমগুলোর বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত এই কর্মকর্তাদের গত মাসের শেষের দিকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার চোসুন টিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কিম জং-উন সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাণহানির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বন্যার কারণে প্রায় ১০০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে চাগাং প্রদেশের প্রাদেশিক পার্টি কমিটির সেক্রেটারি কাং বং-হুন একজন ছিলেন, যাকে ২০১৯ সাল থেকেই তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
জুলাই মাসে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর কোরিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে ৪,০০০ টিরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৫,০০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিম জং-উন নিজে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং জানান যে সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারে কয়েক মাস সময় লাগবে। তিনি নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তবে, বন্যা ও ভূমিধসে এত বেশি মানুষের মৃত্যুর খবরকে মিথ্যা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন কিম জং-উন। তিনি দাবি করেন, উত্তর কোরিয়ার আন্তর্জাতিক খ্যাতি ক্ষুণ্ণ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে দক্ষিণ কোরিয়া এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।
কোরিয়া টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে উত্তর কোরিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের হার নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। মহামারীর আগে, প্রতি বছর প্রায় ১০ জনের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতো, যা এখন ১০০তে পৌঁছেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।