শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আমলারা, বিশেষত সচিবরা, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে বরাবরই বিশ্বস্ত সচিবদের নিয়োগ দিতেন, যারা মন্ত্রীদের পাশ কাটিয়ে বিকল্প সরকার পরিচালনা করতেন। তাদের অনেকেই বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে অবসরের পর আওয়ামী লীগের টিকিটে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং সংসদ সদস্য হয়েছেন।
তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন, যার ফলে তার প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটে। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেয়ার পর তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনকে পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, তবে বেশিরভাগ সচিব এখনও দায়িত্বে বহাল আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশিরভাগ আমলাই বর্তমানে দায়সারা কাজ করছেন এবং প্রশাসনে কর্মচাঞ্চল্য একেবারেই নেই। এছাড়া, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও উঠেছে, বিশেষ করে আনসার বিদ্রোহে কয়েকজন সচিবের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
বিশ্বস্ত আমলাদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও, তারা এখনও তাদের পদে বহাল রয়েছেন। একইভাবে, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারও নানা বিতর্কের মুখে রয়েছেন। শেখ হাসিনার পতনের দিন তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রমে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বর্তমানে প্রশাসনের অচলাবস্থা এবং সরকারের ভিতর থেকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মধ্যে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।