দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে গেলে বড় অংকের টিউশন ফি, মাসিক খরচ, এবং ভ্রমণ ব্যয় সামলানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাংক ব্যালেন্স ভিসার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে অনেক সময় দেখা যায়, কেউ ২০ লাখ টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স দেখিয়েও ভিসা পেয়ে যান, আবার কেউ ৩০ লাখ টাকা দেখিয়েও ভিসা পান না। কেন এমনটা হয়? আসলে, ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যালেন্স কতটা নির্ভরযোগ্য বা প্রভাবিত হয়, তা নির্ধারিত হয় কিছু নির্দিষ্ট উপাদানের ওপর ভিত্তি করে।
কোর্স ফি
বিদেশে পড়াশোনার জন্য আর্থিক প্রস্তুতির বড় অংশ নির্ভর করে কোর্স ফি’র ওপর। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়াশোনার ক্ষেত্রে এক বছরের টিউশন ফি দেখানো প্রয়োজন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং অনুসারে টিউশন ফি’র পরিমাণ পরিবর্তিত হয়। সাধারণত উচ্চ মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি বেশি হয়ে থাকে। তাই, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করে, বছরে কত ডলার টিউশন ফি প্রয়োজন হবে তার একটি তালিকা তৈরি করা উচিত।
থাকার খরচ
বিদেশে পড়াশোনাকালীন সময়ে থাকা-খাওয়া এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচকে লিভিং কস্ট হিসেবে গণ্য করা হয়। ভিসা আবেদনের সময় এক বছরের আনুমানিক থাকার খরচ ঘোষণা করতে হয়। এই খরচ শহরের ওপর নির্ভর করে, যেমন সিডনি ও মেলবোর্নে খরচ বেশি, কিন্তু পার্থ, ডারউইন, অ্যাডিলেইডে তুলনামূলক কম।
ভ্রমণ খরচ
ভিসা পাওয়ার পর বিদেশে যাওয়ার জন্য প্লেনের টিকিট বাবদ যে খরচ হবে, সেটাও ব্যাংক ব্যালেন্সের অংশ হিসেবে দেখাতে হয়। তবে শুধুমাত্র যাওয়ার সময়ের খরচ হিসাব করতে হবে, ফেরার খরচ বিবেচনা করতে হবে না।
সন্তানের স্কুল ফি
যারা পরিবারসহ বিদেশে যাবেন, তাদের স্কুলগামী সন্তানের জন্য স্কুল ফিও ব্যাংক ব্যালেন্সে যোগ করতে হবে।
ব্যাংক ব্যালেন্সের প্রস্তুতি
ভিসা প্রাপ্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যাংক ব্যালেন্সের হিসাব। ব্যাংকের চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, মেয়াদি হিসাব এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকৃত টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে দেখানো যায়। তবে স্থাবর সম্পত্তি বা জমির মতো সম্পত্তি ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে বিবেচিত হয় না।
সাধারণত ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে বিগত ছয় মাসের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী জমা দিতে হয়। তাই এই ছয় মাসের লেনদেন সতর্কতার সাথে করা উচিত। যদি মাত্র এক মাসে বা হঠাৎ করেই বড় অংকের টাকা জমা হয়, তবে তা ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে ব্যাংক ব্যালেন্স তৈরি করতে হবে।