ফেনী, ২৫ আগস্ট ২০২৪ – ফেনী জেলায় চলমান ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন স্থানে লাশ ভেসে আসতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর মধ্যে দুটি মরদেহ কলার ভেলায় করে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী শহরের মিজান রোডে সোনালী ব্যাংকের সামনে হাঁটু পানিতে ভাসতে থাকা একটি মরদেহ শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তা জানাজা ও দাফনের জন্য কয়েকজন ব্যক্তি নিয়ে যান, তবে কোথায় দাফন করা হয়েছে তা জানা যায়নি। পরের দিন, রোববার (২৫ আগস্ট), ফেনী সদর উপজেলার লালপোল এলাকায় একটি শিশুর লাশ ভেসে আসার পর স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হন।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে বন্যায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। তবে বন্যার ভয়াবহতা ও স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক আ ন ম আব্দুর রহিম জানান, সদরের মৌটবী ইউনিয়নের সাতসতী গ্রামের নুরুল আলমের মৃত্যুর পর তার পরিবার কলার ভেলায় মরদেহ ভাসিয়ে দেন। একই দিন তিনি কালীদহ রেললাইনের পাশে আরও একটি অর্ধগলিত মরদেহ ভাসতে দেখেন।
ওমান প্রবাসী মাসুদ খান প্রিন্স তার ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তার বাবা আলীম উল্লাহ (৭৩) মারা যাওয়ার পর লাশ কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও লেখেন, “কেউ বোট বা কোনো উদ্ধারকর্মী আসেনি, দরকার হলে ভেলায় রেখে আরেকটা দিন অপেক্ষা করতেন।”
এদিকে, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল 24-এর সাংবাদিক ফারাবি হাফিজ তার ফেসবুকে একটি লাশের ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে দেখা যায়, ফেনী সদর উপজেলার একটি গ্রামে বন্যার পানিতে ভাসছে একটি মরদেহ। ভিডিওতে প্লাস্টিকে লেখা ছিল, “মুসলিম মহিলা, পারলে জানাজা পড়ে দিয়েন।”
ফেনী শহর, পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞাতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।