ঢাকা, ২৩ আগস্ট ২০২৪:
সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক রিমান্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনায় তিনি সাধারণ জনগণের পাশাপাশি মন্ত্রীদের রোষের শিকার হন। বর্তমানে ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা পলক গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে এসব তথ্য প্রকাশ করছেন।
গণভবন থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা:
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে পলক জানান, ৪ আগস্ট গণভবনে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরাসরি বলেন, “প্রয়োজনে আমাকে বলি দিন, তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করুন। তাদের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন।” পলকের এই বক্তব্যের পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার প্রতি মারমুখী হন। পলক আরও বলেন, “আমি তখন সাহসী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলি, আপনি স্টেপ ডাউন করুন। আওয়ামী লীগকে মানুষ ঘৃণা করছে, থুতু দিচ্ছে।” এর পরপরই তাকে গণভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়।
টেন মিনিট স্কুলের চুক্তি বাতিলের প্রসঙ্গ:
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়, একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে টেন মিনিট স্কুলের সঙ্গে সরকারের একটি চুক্তি বাতিল করা হয়। পলক জানান, “আমি সেই চুক্তি বাতিল করতে চাইনি, কারণ এটি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের একটি অংশ ছিল। তবে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জোর করে সেই চুক্তি বাতিল করান। কারণ, টেন মিনিট স্কুলের অন্যতম কর্ণধার আইমান সাদিক আন্দোলনকারী ছাত্রদের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পলকের আহ্বান:
পলক আরও বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বাস্তবতা মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও, প্রধানমন্ত্রী তা মানতে রাজি হননি। ডিবির একজন কর্মকর্তা তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনি যদি সত্যিই দেশের স্থিতিশীলতা চাইতেন তাহলে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন না কেন?” এই প্রশ্নের উত্তরে পলক চুপ থাকেন।
পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রিকশাচালক কামাল মিয়ার মৃত্যু:
গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রিকশাচালক কামাল মিয়া মারা যান। এ ঘটনায় পল্টন থানায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। নিরাপত্তার কারণে তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। ডিবির গুলশান বিভাগ থেকে তাদের সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।