বাংলাদেশের বর্তমান ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা দেশের প্রতিটি নাগরিকের মাথায় ১ লাখ ৭ হাজার টাকা ঋণের বোঝা চাপিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। ৩০ জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ, এবং বাকি প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ।
এই ঋণের বোঝা বাড়িয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকার, যাদের ক্ষমতা গ্রহণের সময় (২০০৮) ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৩ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সময় (২০২৩) ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫৬ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ১৫ বছরে ঋণ বেড়েছে প্রায় ১২২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ঋণের এই বোঝা দেশের মানুষকেই শোধ করতে হবে, যা বাজেটের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে এবং বাজেটের অর্থায়ন হয় জনগণের করের টাকায়। ফলে দেশের প্রতিটি করদাতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর এই ঋণের বোঝা চাপবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩ সালের জুনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণ মিলিয়ে সরকারের মোট ঋণ ছিল ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকায়। এর ফলে বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১১ হাজার ৯৮০ টাকা।
এছাড়া, বিবিএসের তথ্য অনুসারে, পরিবারের খরচ চালাতে একজন ব্যক্তি গড়ে ১৭ হাজার ৩৬৬ টাকা ঋণ নেন। এর সঙ্গে সরকারের নেওয়া ঋণ যোগ করলে একজন ব্যক্তির গড় ঋণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৫ টাকা।
বিশাল অঙ্কের এই ঋণের টাকার ব্যবহার সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সরকার এমন কিছু প্রকল্পে ঋণ নিয়েছে, যেগুলো এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। প্রকল্পগুলো যদি লাভজনক হয়, তবে সেগুলো চালু রাখা উচিত, অন্যথায় ক্ষতি এড়াতে প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনা করা জরুরি।