অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য দেশটির সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ড. ইউনূস পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সহায়তা চান।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। শফিকুল আলম বলেন, “আমরা বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জানতে পারি যে, শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর টাকা পাচার হয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়িঘর করেছেন। পাচার হওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায়, সে বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ড. ইউনূস।” তিনি আরও বলেন, সরকার পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এনে দেশ পুনর্গঠনের কাজে লাগাতে চায়।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ছাড়াও গতকাল জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পাশে থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য তার সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন
এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ায় আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।” ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “বাংলাদেশ এখন এক ক্রান্তিকালে প্রবেশ করেছে। আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করা এবং শান্তি ও জাতীয় ঐক্য ফিরিয়ে আনা।”
ইতোমধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে বার্তা দিয়েছেন, সেটিকে স্বাগত জানান ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, “আপনার দেশ যে জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আপনি ফ্রান্সের পূর্ণ সমর্থন পাবেন।”
প্রেসিডেন্ট মাখোঁ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ক্রমাগত শক্তিশালী করার লক্ষ্যে মানবাধিকার ও সংখ্যালঘুদের প্রতি সম্মান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন, এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইসহ যৌথ কাজগুলো অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তার দেশ ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ এবং আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় ড. ইউনূসের সফলতা কামনা করেন।