ফেনী: মুহুরী নদীতে পানির মাত্রা গত ৪০ বছরের ইতিহাসকে ছাড়িয়ে গেছে, যার ফলে বাংলাদেশের ফেনী, কুমিল্লা এবং নোয়াখালী জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত ড’ম্বু’র হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্টের গেট খুলে দেয়ার পর থেকেই মুহুরী নদীতে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে এই গেট খোলা হয়েছিল, এবং তখনও এই ধরনের প্লাবনের ঘটনা ঘটেছিল।
ত্রিপুরার গেট খোলার পরিণতি
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডমবুর হাইড্রোইলেকট্রিক প্রজেক্টের গেট খুলে দেওয়ার পর মুহুরী নদীর পানির উচ্চতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলাগুলোতে বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়েছে এবং এ পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বন্যার প্রভাব ও সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি
মুহুরী নদীর পানির এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে ফেনী, কুমিল্লা, এবং নোয়াখালী জেলার বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফসলের ক্ষতি, গবাদি পশুর প্রাণহানি, এবং ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বন্যার পানি এখনো কমার কোনো লক্ষণ নেই, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। প্রশাসন ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছে, তবে বন্যার ব্যাপকতা এতটাই যে সাধারণ মানুষকে নিজের অবস্থান থেকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
নাগরিকদের প্রতি আহ্বান
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সকল নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মানুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ত্রিপুরার ডমবুর গেট খোলার পর মুহুরী নদীর পানির এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যে ধরনের বিপর্যয় ডেকে এনেছে, তা কেবলমাত্র সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে সামাল দেওয়া সম্ভব। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুততার সাথে বন্যা মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
পরিস্থিতি যতই জটিল হোক না কেন, সবাইকে সচেতন থেকে এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে।