ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
অবশেষে কার্যকর হলো গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ—বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া। সোমবার (আজ) আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইসিআরসি) নিশ্চিত করেছে, হামাস জীবিত ২০ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে, যা গাজা উপত্যকায় চলমান শান্তিচুক্তির অংশ। খবর আল জাজিরা।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সাতজন জিম্মিকে আইসিআরসি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি বন্দিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। এর বিপরীতে ইসরাইল মুক্তি দিচ্ছে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে, যাদের অধিকাংশকে গত দুই বছরের আগ্রাসনের সময় আটক করা হয়েছিল।
বন্দি বিনিময়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই গাজা সীমান্তজুড়ে ফিলিস্তিনি স্বজনদের ভিড় দেখা গেছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে হাজারো মানুষ মুক্ত বন্দিদের বরণে জড়ো হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের প্রথম দফায় নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে নেওয়া হবে, যেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বন্দি বিনিময়ের এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই আজ মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গাজা শান্তি সম্মেলন, যেখানে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ট্রাম্প সংক্ষিপ্ত সফরে ইসরাইল গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর ইসরাইলি বাহিনীর পাল্টা হামলায় গাজা পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় প্রণীত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়। গত শুক্রবার সকাল থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং আজ বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হলো।
বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রত্যাশী মানুষ আশা করছে—এই বন্দি বিনিময় দুই জাতির মধ্যে স্থায়ী শান্তির দ্বার খুলে দেবে এবং গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানবিকতা আবারও মাথা তুলে দাঁড়াবে।