ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় দুই দশক পর কোনো গণমাধ্যমে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিলেন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এই দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি, বিএনপির কৌশল, খালেদা জিয়ার ভূমিকা, এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে বিস্তারিত মতামত প্রকাশ করেন।
সোমবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য নয়) প্রচারিত এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বলেন, “আপনি এমন একজন মানুষের কথা বলেছেন, যিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বারবার ভূমিকা রেখেছেন—তিনি হলেন খালেদা জিয়া। যিনি প্রতিটি স্বৈরাচারী সময়েও গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াইয়ে আপোষহীন থেকেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি একজন সুস্থ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হলো, আর যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, তখন তিনি অসুস্থ। তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে—এটা জাতির সবাই জানে।”
খালেদা জিয়া আসন্ন নির্বাচনে কোনো ভূমিকা রাখবেন কিনা—এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন,
“গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যদি তার শারীরিক সক্ষমতা অনুমতি দেয়, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি কোনো না কোনোভাবে ভূমিকা রাখবেন।”
তবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ এখনই নিশ্চিত নয়, কারণ বিষয়টি তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে।
বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে পরিবারকেন্দ্রিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন,
“রাজনীতি পরিবারকেন্দ্রিক নয়, এটি জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। যে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে, সে-ই এগিয়ে যাবে।”
তিনি তুলনা টেনে বলেন, “যেমন একজন চিকিৎসকের সন্তান চিকিৎসক হলে ভালোও হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। তেমনি রাজনীতিতেও যোগ্যতা ও জনসমর্থনের ওপরই সব নির্ভর করে।”
নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন,
“বিগত ১৭ বছরে আমি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি, অপপ্রচারের মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু আমি সব অতিক্রম করেছি। এটাই প্রমাণ করে রাজনীতি কেবল পরিবারকরণ নয়, এটি সংগ্রামের ফল।”
তার স্ত্রী বা কন্যা ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসবেন কিনা—এমন প্রশ্নে তারেক রহমান সংক্ষিপ্তভাবে উত্তর দেন,
“সময় ও পরিস্থিতিই তা বলে দেবে।”
দীর্ঘ দুই দশক পর দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বিএনপির নীতিগত অবস্থান, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কৌশল, ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, বিএনপি এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নতুন রূপরেখা তৈরিতে মনোযোগী।