ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এসেছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সুপারিশে প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। আগামী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে এ সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল (শুক্রবার) স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে শপথ নেন সুশীলা কার্কি। এর মাধ্যমে নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। ছোট পরিসরের একটি মন্ত্রিসভা নিয়ে তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, যার মেয়াদ থাকবে ৬ মাস। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব তাদের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে জেন-জির আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল এবং সেনাবাহিনী প্রধান অশোক রাজ সিগদেল আলোচনায় বসেন। আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত হয়।
সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। দায়িত্বকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান জেন-জির আন্দোলনকারীদের কাছে তাকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে নেপালের তরুণ প্রজন্ম—জেন-জিরা—রাস্তায় নেমে আসে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন নিহত হন। এরপর সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন এবং পরে গা ঢাকা দেন। ওইদিন ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালান। এমনকি রাস্তায় অর্থমন্ত্রীকে পেটানোর ঘটনাও ঘটে।
রাজনৈতিক সংকটের এমন মুহূর্তে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ নেপালে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।