ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের উদ্যোগ সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থ চেষ্টাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ রূপ নিয়েছে ভয়াবহ গণআন্দোলনে। ইতোমধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫১ জন। একই সঙ্গে কারাগার থেকে পালানো ১২ হাজারেরও বেশি বন্দির এখনো কোনো সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নেপাল পুলিশ মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন বিক্ষোভকারী, ৯ জন কয়েদি, ৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং ১৮ জন সাধারণ মানুষ। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন, যাদের অধিকাংশই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন।
ঘিমিরে আরও জানান, দেশব্যাপী বিভিন্ন কারাগার থেকে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ বন্দি পালিয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু আবার ধরা পড়লেও এখনো ১২ হাজার ৫৩৩ জন পলাতক রয়েছেন। নিহত কয়েদিদের অনেকে পালানোর সময় বা পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান। এ ছাড়া বেশ কিছু কয়েদি ভারত সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের আটক করে।
ইতোমধ্যে নেপালের সেনাবাহিনী কারফিউ জারি করেছে। তারা জানায়, অস্থিরতার মধ্যে লুট হয়ে যাওয়া ১০০টির বেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেলও দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল এবং সেনাপ্রধান আশোক রাজ সিগদেল সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি ও এক তরুণ নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, সুশীলা কারকিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের সম্ভাবনা প্রবল।
একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “সুশীলা কারকিকে আজই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। জেনারেশন জেন-জি বিক্ষোভকারীরাও তাকে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রস্তাব করেছে।”
এ ঘটনায় দেশজুড়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরকারের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ নেই।
সূত্র: আল জাজিরা